ঠাকুরগাঁও:আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সামর্থ্যবান মুসলমানরা ঈদুল আজহায় গরু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আর কিছুদিন পরেই ঈদ। ঈদে দেশীয় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রান্তিক কৃষক ও ছোট খামারিরা গরু-ছাগল পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিছুটা বাড়তি লাভের আশায় ঈদকে সামনে রেখে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গরুকে গোসল করা, খাবার দেয়াসহ পশুর পরিচর্যা নিয়ে এক প্রকার ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা।

এ বছর খুশির খবর হলো ক্ষতিকর ইনজেকশন ও ট্যাবলেট ব্যবহার না করে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন খামারি ও কৃষকেরা। এরই ধারাবাহিকতায় সদর উপজেলার সালন্দর তেলীপাড়া, মণ্ডলপাড়া, চণ্ডিপুর, গড়েয়া মিলনপুর, আখানগর, বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গরুর খামারে গিয়ে দেখা যায়, খামারিরা গরু-ছাগলের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক মিলিয়ে ৪ হাজার ৩১৭টি গরুর খামার রয়েছে। আর এ থেকে ৬৯ হাজার পশু উৎপাদিত হবে, যা চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত।

সদর উপজেলার সালন্দর মণ্ডলপাড়ার গরুর খামারি মো. হাবিবুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু লালন-পালন করে বিক্রি করে আসছি। প্রত্যেক বছর কোরবানির কমপক্ষে ৩-৪ মাস আগে বিভিন্ন হাট থেকে গরু সংগ্রহ করি, সেগুলোকে ক্ষতি ব্যতিরেকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করি। এ বছরও আমার খামারে ২০টি গরু প্রস্তুত করছি  কোরবানির জন্য। তবে গো-খাদ্যের দাম যে হারে বেড়েছে এতে করে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় গরুর প্রয়োজনীয় দামে বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে। খামারের বেশিরভাগ গরু প্রায় ১ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারলে কিছুটা মুনাফা হবে।

ভাউলার হাট নাপিত পাড়া গরু খামারি বিষ্ণু বলেন, ‘আমি প্রত্যেক বছর  কোরবানির ৪ মাস আগে ৫০-৬০ হাজার টাকা মূল্যমানের গরু সংগ্রহ করি। এ বছরও ৩৫টির মতো গরু প্রস্তুত করছি। ঈদের আগে সেগুলোকে মোটাতাজাকরণের পর কোরবানির হাটে উঠাব। তবে ভয় থাকে দেশের বাইরে থেকে গরু আনা হলে আমাদের মতো খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বছর কোরবানি ঈদের জন্য ৭৫ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ছোট-বড় খামারিদের যাবতীয় তথ্য, পরামর্শ, ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। খামারিদের সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস-খড়ের পাশাপাশি খৈলগুঁড়া ও ভুসি খাওয়ানোর পরামর্শ প্রদান করা হয়। এ বছর সাধারণ মানুষজনের চাহিদা পূরণ করেও পশু উদ্বৃত্ত থাকবে এবং খামারিরা ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা করছি।